শরিক জামায়াতের পাশে নেই বিএনপি

রাজধানীতে শরিক জামায়াতে ইসলামীকে একটি আসন ছেড়ে দিলেও দলটির প্রার্থীর পক্ষে প্রচারে সরব নয় বিএনপি। স্বাধীনতাবিরোধী দলটির নেতাকর্মীরা তাদের মতো করে চেষ্টা করে যাচ্ছেন। তবে কর্মী সংকটে মিছিল বা পথসভা হচ্ছে না। দল বেঁেধ এলাকায় বাড়িতে বাড়িতে লিফলেট বিতরণ করছেন দলটির নেতাকর্মীরা।

এই আসনে তিনবারের সংসদ সদস্য কামাল আহমেদ মজুমদারের পক্ষে চলছে জমজমাট প্রচার। তার বিশাল কর্মীবাহিনী সকাল থেকে গভীর রাত অবধি সক্রিয় এলাকায়। তারা পথসভা, পোস্টার, ব্যানার, মাইকিং করছেন, পাশাপাশি বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে চাইছেন ভোট।

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ৪, ১৩, ১৪ ও ১৬ ওয়ার্ড নিয়ে ঢাকা-১৫ আসনটি গঠিত। ২০০৮ সালের নির্বাচনে বিএনপির হামিদুল্লাহ খানকে ৪৪ হাজার ৩০৮ ভোটে হারান কামাল আহমেদ মজুমদার। ২০১৪ সালের নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী ইখলাস উদ্দিন মোল্লাকে ২৬ হাজার ৭৮৬ ভোটে পরাজিত করেন তিনি।

জামায়াতের প্রার্থী এখানে লড়ছেন বিএনপির প্রতীক ধানের শীষে। আর তিনি প্রচারে তার নিজের দলের পরিচয়টা সেভাবে তুলে না ধরে নিজেকে ২০ দল এবং ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী হিসেবে পরিচয় দিচ্ছেন। তবে তার প্রচার বেশি চলছে অনলাইনে।

শেওড়াপাড়ার বাসিন্দা আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘ধানের শীষের প্রচারণা তো তেমন চোখে পড়ে নাই এলাকায়। মাঝে মাঝে শুনি তারা বিভিন্ন এলাকায় লিফলেট বিতরণ করেন। কিন্তু এখনো চোখে পড়েনি। তবে কামাল আহমেদ মজুমদারের প্রচার-প্রচারণা নিয়মিতই দেখি।’

সোমবার বৃষ্টির আগে শেওড়াপাড়া, ৬০ ফিট এলাকা ঘুরে কোথাও ধানের শীষের পোস্টার চোখে পড়েনি। নৌকার পোস্টার ছিলো সর্বত্র। তবে মঙ্গলবার বৃষ্টির কারণে অনেক জায়গার পোস্টার খুলে পড়ে যেতে দেখা গেছে।

জামায়াত নেতার পক্ষে যে প্রচার দল আছে, সেখানে স্থানীয় বিএনপির নেতা-কর্মীদের অংশগ্রহণ নেই। ধানের শীষের প্রার্থীর মিডিয়া সমন্বয়ক আতাউর রহমান সরকারের কাছে তাদের প্রচারের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়ে দেন মেইলে। সেখানে বলা হয়, ‘শফিকুর রহমানের ধানের শীষ প্রতীকের পক্ষে মঙ্গলবার সকালে ভোট চেয়ে মিরপুর ৬০ ফিট পীরেরবাগ আমতলা থেকে শুরু হয়ে মুক্তি হাউজিং পশ্চিম শেওড়াপাড়া পার হয়ে রোকেয়া স্মরণী পর্যন্ত গণসংযোগ ও প্রচার মিছিল করে ধানের শীষের সমর্থকরা।’

‘এতে উপস্থিত ছিলেন মিডিয়া সমন্বয়ক আতাউর রহমান সরকার, ছাত্রনেতা সালাউদ্দিন আইউবী, ২০ দল নেতা সাইফুল ইসলাম, মিজানুল হক, মঈন উদ্দিন, শিবির নেতা যুবায়ের, ফয়সাল আমীন ও এনামুল হক সহ নেতা-কর্মীরা।’

এই বিজ্ঞপ্তিতে যাদের নাম আছে, তারা সবাই জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মী। বিএনপির কেউ নন।

অন্যদিকে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর পক্ষে নিজ দলের নেতাকর্মীরা ছাড়াও আছেন জোটের শরিকরা। বিরূপ আবহাওয়াতেও মঙ্গলবার সকালে স্থানীয় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন কামাল আহমেদ। পরে বিকালে বিকালে ১৪ নং ওয়ার্ডের আওতাধীন বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগ করেন। বিজয়ের ব্যাপারে তার কোনো সংশয় নেই।

নৌকার প্রার্থী বলেন, ‘মিরপুরের জল্লাদ কাদের মোল্লার ফাঁসি হওয়ার পর বিএনপি এই এলাকায় স্বাধীনতাবিরোধী দলের প্রার্থী দিয়েছে। জনগণ এর জবাব দেবে তাদের।’

গত ১০ বছরে তার আমলে এলাকায় যে উন্নয়ন হয়েছে, সেটারও প্রভাব পড়ার বিষয়ে আত্মবিশ্বাসী কামাল আহমেদ মজুমদার। বলেন, ‘তিন দফায় নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করে জয়লাভ করেছি। এই এলাকার উন্নয়ন দৃশ্যমান। হচ্ছে মেট্রোরেল। এসব কারণে মানুষ আমাকেই আবার এমপি হিসেবে দেখতে চায়, যুদ্ধাপরাধের দায়ে অভিযুক্ত কোনো দলের প্রার্থীকে নয়।’

সূত্র: ঢাকা টাইমস